শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ , ১০ জিলকদ ১৪৪৫

খেলা

তাসকিন-সাইফউদ্দিন তোপের পর তানজিদ-হৃদয় ঝড়ে জয়ে সিরিজ শুরু

স্পোর্টস রিপোর্টার মে ৩, ২০২৪, ২২:৫৪:৩৫

173
  • ফিফটির পর তানজিদ। ছবি-বিসিবি

জিম্বাবুয়ে : ১২৪/১০ (২০.০ ওভারে)

বাংলাদেশ : ১২৬/২ (১৫.২ ওভারে)

ফল : বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।

প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ : তাসকিন আহমেদ (বাংলাদেশ)।

চেনা ছন্দে তাসকিনের (৩/১৪) পাশে প্রত্যাবর্তন ম্যাচে সাইফউদ্দিনের তোপ (৩/১৫)। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সবুজ পিচে এই দুই পেসারের তোপে জিম্বাবুয়েকে ১২৪ রানে অল আউট করে বড় জয়ের আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ।

দুই দফা বৃষ্টি দুর্ভাবনার কারণ হতে পারেনি। ১৫টি ওডিআই ম্যাচের পর টি-টোয়েন্টি অভিষেক ম্যাচে তানজিদ হাসান তামিম ভাগ্যবান।

টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরির কৃতিত্ব তানজিদ হাসান তামিমের।  ২০০৭ সালে কেপটাউনে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক ম্যাচে জুনায়েদ সিদ্দিকী করেছিলেন ৭১ রান।

তিনবার জীবন ফিরে পাওয়া এই ওপেনারের অভিষেক ফিফটিতে (৪৭ বলে ৮ চার, ২ ছক্কায় ৬৭*) এবং তাওহিদ হৃদয়ের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে (১৮ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় ৩৩*) ২৮ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতে সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। 

এখন আর জিম্বাবুয়ের সেই শক্তি নেই। উগান্ডার কাছে বাছাইপর্বে হেরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় কাতর দলটি এবার বাংলাদেশে এসেছে শিক্ষা সফরে। 

এর আগে বাংলাদেশে যতোবার এসেছে, ততোবারই স্পিন ফ্রেন্ডলি পিচ প্রতিবন্ধকতার দেয়াল তৈরি করেছে। চার বছর পর বাংলাদেশে এসে সবুজ পীচে হতভম্ব হয়েছে।  বাংলাদেশের দুই পেসার তাসকিন (৩/১৪), সাইফউদ্দিনের (৩/১৫) তোপে ১২৪ রানে অল আউট হয়েছে জিম্বাবুয়ে।

 টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শান্ত সবুজ পিচে জিম্বাবুয়েকে ভয় পাইয়ে দিতে। তা পেরেছেন শান্ত। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে অফ স্পিনার শেখ মেহেদীর এক স্পেলে (২-০-৭-২) জিম্বাবুয়ে ৩৮ রানে হারিয়েছে ৪ উইকেট। পরের ৪ ওভারে ১১ রান যোগ করে জিম্বাবুয়ে হারিয়েছে ৩ উইকেট। তাসকিন দ্বিতীয় স্পেলে (২-০-২-২) জিম্বাবুয়ের কোমর দিয়েছেন ভেঙে।

১৮ মাস পর টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যাবর্তনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে বিবেচনা করার দাবি জোরালো করেছেন পেস অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন (৪-০-১৫-৩)। 

কামব্যাক ম্যাচে প্রথম ওভারে গাম্বিকে (১৪ বলে ১৭) শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন।  সাইফউদ্দিনের বলে লুক জংগেকে(৬ বলে ২) তাওহিদ হৃদয় অ্যাক্রোবেটিক ফ্লাইং ব্যাক ডাইভে যে ক্যাচ নিয়েছেন তা এক কথায় বিশ্বমানের।

শেষ ওভারে মুজারাবানি ফ্লাশ করতে যেয়ে হয়েছেন বোল্ড। ইনিংসের শেষ বলে শর্ট ফাইন লেগে ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ক্যাচ দিয়েছিলেন। তবে ওভার স্টেপিংয়ের অপরাধে 'নো' কল হওয়ায় উইকেটের আনন্দ করতে পারেননি। 

সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুই ডিজিটে থামানো যেতো জিম্বাবুয়েকে। তবে তা সম্ভব হয়নি ১৮তম ওভারে লেগ স্পিনার রিশাদের অমিতব্যয়ী বোলিংয়ে। ওই ওভার খরচা করেছেন তিনি ১৬ রান। স্কোরশিটে ৪১ রান উঠতে যে দলটা হারিয়েছে ৭ উইকেট, সেই জিম্বাবুয়ের ৮ম উইকেট জুটি যোগ করেছে ৬৫ বলে ৭৫ রান।

ব্রেক থ্রুটা দিয়েছেন তাসকিন শেষ স্পেলে (১-০-৯-১), ক্লাইভ মান্দেকে (৩৯ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৪৩) দিনের সেরা ডেলিভারি ইয়র্কারে লেগ স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে। তার পার্টনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজা শেষ বলে হয়েছেন রান আউট (৩৮ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৩৪)। 

১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে প্রত্যাশিত স্কোর হয়নি (৩৫/১) বাংলাদেশের। চট্টগ্রামে লিটনের সর্বশেষ ২টি ওডিআই ইনিংস ছিল ০ এবং ০! ২ মাস আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ লিটন দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও ব্যর্থ হয়েছেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে মুজারাবানিকে স্ট্রেইট খেলতে যেয়ে লিটন বোল্ড হয়েছেন (৩ বলে ১)।

লুক জঙ্গেকে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন শান্ত ২১ রানে (২৪ বলে ১ বাউন্ডারি)।

ভাগ্যটা ভাল তানজিদ হাসান তামিমের। মুজারাবানির দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে পুল করতে যেয়ে দিয়েছিলেন সহজ ক্যাচ। ৩ রানের মাথায় ওই ক্যাচটি উইকেট কিপার এবং মুজারাবানি দু'জন মিলে নিতে যেয়ে ক্যাচ ফেলে দিয়েছেন। ২ বল পর এক্সট্রা কভারে দিয়েছিলেন ক্যাচ। সেই ক্যাচটা ও হাত থেকে পড়ে গেছে।

৩ এবং ৪ রানের মাথায় বেঁচে যাওয়া তানজিদ পরের ওভারে মুজারাবানির উপর চড়াও হয়েছেন। মেরেছেন ১ চার, ২ ছক্কা। ৩৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করেছেন। ৫৬ রানের মাথায় আবার দিয়েছিলেন ক্যাচ। নাগারাভার বলে স্কোয়ার লেগের ফিল্ডারের হাত ফসকে গেছে সেই ক্যাচটা। তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় জুটিতে ৩৬ বলে ৬৯ রানে দিয়েছেন তানজিদ নেতৃত্ব। তাতেই ২৮ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ।  

বাংলাদেশের ইনিংসে দুইবার হানা দিয়েছে বৃষ্টি। ৩ ওভার শেষে ( রাত ৮টা ১৯ মিনিট) প্রথম দফায় চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আক্রান্ত করেছে বৃষ্টি। এ সময়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১০/১। 

৩৬ মিনিট পর খেলা শুরু হওয়ার পর ৭.২ ওভারে (রাত ৯টা ১১ মিনিট) বাংলাদেশের স্কোর যখন ৪৪/১, তখন দ্বিতীয় দফায় আক্রান্ত হয়েছে বৃষ্টি। খেলা তখন বন্ধ ছিল ২৭ মিনিট। তবে দু'দফার বৃষ্টি চোখ রাঙাতে পারেনি বাংলাদেশকে। এমনকি পরিবর্তিত টার্গেটে ব্যাট করতে হয়নি বাংলাদেশকে।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন